হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক (সুমন) কে চুনারুঘাট থানার ওসির মাধ্যমে হত্যার হুমকি দিয়েছে একটি মহল। এ ঘটনার পর গতকাল শনিবার (২৯ জুন) রাতে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় হাজির হয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন ব্যারিস্টার সুমন।
Read Moreরোববার (৩০ জুন) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, 'আমি থানায় জিডি করার আগেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত ছিল যারা হুমকি দিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। কারণ তাদের থেকে আমি হুমকির তথ্য পেয়েছি। রাষ্ট্র আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় কি না, সেই প্রশ্ন এখন দেখা দিয়েছে।'
ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, 'আমার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছি। এখন দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। মৃত্যুর ভয় আমি করি না। কিন্তু আমার এলাকার মানুষকে নিয়ে চিন্তা করি।'
এর আগে গতকাল রাতে ‘অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল হত্যার জন্য টিম নিয়ে মাঠে নেমেছে’ জেনে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও জাতীয় সংসদের সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
শেরেবাংলা নগর থানায় করা সাধারণ ডায়েরিতে ব্যারিস্টার সুমন উল্লেখ করেছেন, 'গত ২৭ জুন ঢাকায় অবস্থানকালে রাত আনুমানিক ২টার সময় আমার নির্বাচনী এলাকার চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তার সরকারির মোবাইল ফোন থেকে আমার হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে জানান যে, আপনাকে হত্যার জন্য অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল গত তিন দিন আগে ৪-৫ জনের একটি টিম নিয়ে মাঠে নেমেছে। আপনি রাতে বাইরে বের হবেন না এবং সাবধানে থাকবেন।'
'তখন আমি ওসির কাছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি ওই ব্যক্তির পরিচয় জানাতে অস্বীকার করেন এবং আমাকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন। এই বিষয়টি জানার পরে আমি মারাত্মকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।'
সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটর ছিলেন, এই পদ থেকে তিনি ২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর পদত্যাগ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অসঙ্গতি তুলে ধরার পাশাপাশি মানবিক কাজ করে জনপ্রিয়তা পান ব্যারিস্টার সুমন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন ব্যারিস্টার সুমন।
রাতে জিডির তদন্ত কর্মকর্তা শেরে বাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শরীফুজ্জামান শরীফ গণমাধ্যমকে জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'জিডি হয়েছে বেশিক্ষণ হয়নি। আমরা সাধারণত ১২/১৩ ঘণ্টা পরে অফিসিয়াল কপি পাই। আপনি যে কপি পেয়েছেন সেটা আমিও পেয়েছি, তবে অফিসিয়াল পাইনি। জিডি হয়েছে এটা নিশ্চিত।'
জিডিতে ব্যারিস্টার সুমন উল্লেখ করেছেন, 'গত ২৭ জুন ঢাকায় অবস্থানকালে রাত আনুমানিক ৮ টার সময় আমার নির্বাচনী এলাকার চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার সরকারি মোবাইল থেকে আমার হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে জানান যে, আপনাকে হত্যার জন্য অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল গত তিন দিন আগে ৪-৫ জনের একটি টিম নিয়ে মাঠে নেমেছে। আপনি রাতে বাইরে বের হবেন না এবং সাবধানে থাকবেন।'
জিডিতে সুমন আরও উল্লেখ করেছেন, 'তখন আমি ওসির কাছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি ওই ব্যক্তির পরিচয় জানাতে অস্বীকার করেন এবং আমাকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন। এই বিষয়টি জানার পরে আমি মারাত্মকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।'
জিডির বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে জিডির কপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে সুমন লিখেছেন, 'ভয়টা মৃত্যুর নয়, ভয়টা আমার এলাকার মানুষের জন্য! কী হবে যদি বেঁচে না থাকি।'
হুমকির বিষয়ে জানতে চুনারুঘাট থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। তবে একজন প্রবাসী গণমাধ্যম কর্মীর সঙ্গে ওসির কথোপকথনের একটি অডিও কালবেলার হাতে এসেছে। সেখানে ওসিকে বলতে শোনা যায়, 'আমাকে একজন ফোন করে এমপি সাহেবের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে বলে। আমি বলি, এটা আমার কাজ নয়। তখন আমার কাছে এমপি সাহেবের নম্বর চায়। পরে আমি তার পরিচয় জিগ্যেস করলে সে বলে, এমপি সাহেবের একটা থ্রেড আছে। পরে বিষয়টি আমি এমপি সাহেবকে বলি।'
থ্রেডকারীরা শক্তিশালী এটি আপনি কীভাবে বুঝলেন, ওই সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে ওসি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
.png)
No comments: